শিশুদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষার উপায় এবং শিশুরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে প্রতিরোধের উপায় সমূহ নিচে বর্ণনা করা হলো

শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য আমাদের যে সকল জ্ঞান থাকা আবশ্যক তা আপনাদের মাঝে আজকে তুলে ধরতে চাই। শিশুদের অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে কিন্তু আমরা তা বুঝতে পারি না কারণ আমরা সঠিকভাবে রোগের লক্ষণগুলো জানিনা। যদি আমরা সঠিকভাবে শিশুদের সকল রোগের লক্ষণ গুলো জানতাম তাহলে খুব সহজেই বুঝতে পারতাম আমাদের শিশুরা কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। রোগে আক্রান্তর ধরন এবং রোগে আক্রান্তের কারণ জানতে পারলে আমরা শিশুদের সঠিকভাবে রোগের চিকিৎসার উপায় বা পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ৩০ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪৯,১৩৮ জন মানুষ। তাদের মধ্যে মারা গেছেন মোট ২৪৬ জন মানুষ। ২০২৩ সালের জানুয়ারী থেকে গত ১৮ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা শিশু হাসপাতালে মোট ২৭১জন শিশু ভর্তি হয়েছে।ডেঙ্গু মশা বাহিত একটি রোগ এডিস মশার কারণে ডেঙ্গু হয়ে থাকে । ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে ডেঙ্গু থেকে সচেতন থাকতে হবে ।
নিম্নে দেখে নেই কিভাবে ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতিরোধের উপায় জেনে নেই
১। আমরা ডেঙ্গু কিভাবে সনাক্ত করব ।
২। আমরা আক্রান্ত হলে কিভাবে প্রতিরোধ করতে পারি।
আমরা ডেঙ্গু কিভাবে সনাক্ত করব –
আমরা জানি সাধারণত এডিস মশাড় কামড়ে ডেঙ্গু হয়ে থাকে। এডিস মশা কামড় দেওয়ার পর একজন ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে এবং ১০ দিনের মধ্যে নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়।
১।আমরা জানি যে এটি ভাইরাস জনিত রোগ তাই জ্বরের তাপমাত্রা ১০১ থেকে ১০২ এবং ১০৩ ডিগ্রি ফরেন হাইট হতে পারে ।যদি ১০০ এর নিচে হয় তাহলে ডেঙ্গু থাকতে পারে ।
২. শিশুরা স্বাভাবিক থাকে না এবং আগের মতন চলাফেরা করে না। সব সময় কান্নাকাটি করে ।
৩।শিশুরা আগের মতন খেতে চায় না কিছু খেলেই বমি বমি ভাব হয় এবং বমি করে দিতে চায় ।
৪।৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত প্রসাব হয় না ।
৫।শরীরে লালচে লালচে ভাব দেখা দেয় ।
৬।শিশুদের মাথা ব্যাথা থেকে শুরু করে পানি শূন্যতা এবং পাতলা পায়খানা হতে পারে
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে আমরা কিভাবে তা প্রতিরোধ করতে পারি
আমরা যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে থাকি তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে ।যদি আমাদের পরিস্থিতি ভালো থাকে তাহলে বাড়ি থেকে আমরা যত্ন সহকারে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়া সম্ভব হবে ।
আমাদের মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই অবশ্যই সি বি সি পরীক্ষা করতে হবে ।যদি আমাদের ডেঙ্গু শনাক্ত হয় তাহলে প্রতিদিন আমরা সি বি সি পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের পরিস্থিতির ভালো-মন্দ দেখতে হবে ।প্রাথমিকভাবে নিম্নোক্ত গ্রহণ গুলো গ্রহণ করা যেতে পারে ।
১ঃযদি জ্বর থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে
২ঃআমরা জানি যে মায়ের বুকের দুধ নবজাতকের জন্য আদর্শ পুষ্টিকর খাবার তাই আমরা শিশুকে সবসময় মায়ের বুকের দুধ পানি খাওয়াতে হবে ।এতে রোগীর আক্রমণ অনেক কমে যায় এবং শিশুদের শারীরিক মানসিক ভাবে সুস্থ থাকে ।মায়ের বুকের দুধে মোট ২০০ টি উপাদান রয়েছে যা একজন শিশুর একান্ত প্রয়োজন যা অন্য কোন দুধে পাওয়া যায় না ।
৩. সব সময় তরল ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে ।
৪। আক্রান্ত শিশুর অবশ্যই খাওয়ার স্যালাইন এবং ডাবের পানি সাথে ফুলের শরবত, স্যুপ বানিয়ে খাওয়াতে হবে এবং সময় মতো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে ।

ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে আমাদের কয়েকটি উপায় গ্রহণ করতে হবে যেমনঃ
১।মশা যেই জায়গা থেকে জন্ম হয় সেই জায়গা ধ্বংস করতে হবে
২।ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে ।
৩।মশা নিবারণের ব্যবহার করতে হবে ।
৪।সুরক্ষামূলক জামাকাপড়।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে আমাদের করণীয় বিষয়গুলো জেনে নেই–
১।মশা যে জায়গা থেকে জন্ম হয় সেই জায়গায় ধ্বংস করতে হবে-এডিস মশা সাধারণত পচা পানি দুর্গন্ধ জাতীয় জায়গা থেকে বংশ বৃদ্ধি করে। আপনার বাড়ির আশেপাশে ময়লা আবর্জনা দুর্গন্ধ জাতীয় জায়গা আছে কিনা তা খেয়াল রাখুন।বেশিদিন কোন পাত্রে পানি ধরে রাখবেন না,পুরনো কোন পাত্রে যেমন পানির বোতল ফুলের টপ পুরনো কোন কিছুতে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
২। ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে- দিনে অথবা রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে রাখুন খেয়াল রাখুন যেন কোন ভাবেই মশা কামড়াতে না পারে মশারির কোন জায়গায় ছিদ্র আছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
৩। মশা নিবারণের বহার করতে হবে-মশারি বাড়ানোর জন্য স্প্রে মেশিন ব্যবহার করুন এবং খেয়াল রাখুন যেন এগুলো বাচ্চার ত্বকের কোন ক্ষতি না হয়।প্রতিরোধ করার সময় প্যাকেটের গায়ের ব্যবহার ভালোভাবে পড়ে নিন এবং মেয়াদ আছে কিনা তা দেখে কিনুন।
৪। সুরক্ষা মুলক জামাকাপড়- শিশুদের কিংবা পরিবারের সকলেই জামা কাপড়পরিধান করুনএবং কোনভাবেই যেন মশা কামড়াতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখুনমশার হাত থেকে বাঁচার জন্য আমাদের ফুল প্যান্ট অথবা ফুল শার্ট খুবই উপযোগী ।
মশা প্রতিরোধের জন্য আমরা যে সকল মশার কয়েল ব্যবহার করে থাকি যেমন অ্যারোসল, কয়ে, ফাস্ট কার্ডএগুলো আমাদের জন্য অনেক ক্ষতিকর সেটা আমরা সবাই জানি। তবে আমরা এর পরিবর্তে আমরা অনেক কিছু ব্যবহার করতে পারি যেমন মসকুইটো, ক্লিয়ার বাল, ইলেকট্রিক কিলার ল্যাম্প,ইলেকট্রিক কয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারি।