স্বাস্থ্য টিপস

শীতকালে কিভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন ।

আপনি কি শীতকালে শুষ্ক ত্বক নিয়ে ভাবছেন? কিভাবে শীতকালে ত্বককে শুষ্ক রাখবেন, যত্ন করবেন, কি করলে ত্বকের কোন ক্ষতি হবে না. কিভাবে শীতকালে ত্বক ভালো রাখা যায়। আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে আপনাদের এই সকল বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করব। তাই আশা করছি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

হিম হিম শীতল হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতকাল আসন্ন! কিন্তু শীতের হিম বাতাস ত্বকের জন্য আরামদায়ক নয়। শীতের শুষ্কতা কেড়ে নেয় ত্বকের আদ্রতা। , শিট যত বাড়তে থাকে , ত্বকের সমস্যা তত বেশি হতে থাকে। তাই এ সময় নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করলে আপনার ত্বক থাকবে মিশ্রণ ও কোমল। শীতের সময় ত্বকের যত্ন নিতে কোন কোন স্টেপ গুলো একদমই মিস করা যাবে না, সেটি নিয়ে আমাদের এই আজকের আর্টিকেল।

শীতের সময় ত্বকের যত্ন

শীতের সময় আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে হলে আমাদের বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। আমরা যদি ঠিকমতো নিয়মকানুন মেনে চলতে পারি তাহলে অবশ্যই আমাদের তো ভালো থাকবে। তকের কোন ক্ষতি হবে না, তাই চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই নিয়মগুলোঃ

১। ১) লিপস এক্সফোলিয়েশন

ত্বকের এক্সফলিয়েট কম বেশি আমরা সবাই করি। শীতকালে আমাদের সবচেয়ে বেশি আমাদের ঠোঁটের ক্ষতি হয়ে থাকে, শীতকালের ঠোঁট বেশি রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে যায়।  এক্সফোলিয়েশন ত্বকের ডেড সেলস দূর করতে সাহায্য করে, ত্বককে নিশ্বাস নিতে সাহায্য করে। পাশাপাশি রুক্ষ ত্বক কোমল করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় তথা ত্বক পলিশ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া ত্বকের উপরিভাগে থাকা ময়লা, পল্যুশন এগুলোও দূর করে। এক্ষেত্রে লিপ স্ক্রাব কিনে নিতে পারেন, চাইলে ফেইস স্ক্রাব দিয়েও কাজটি করে নিতে পারেন।

২। সকালে ঘুম থেকে উঠে

সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের ত্বকের ধরন বুঝে ফেসওয়াশ বা কোমল ময়েশ্চারযুক্ত সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে ফলতে হবে। এ ছাড়া এক দিন অন্তর স্ক্রাব করতে পারেন। ত্বক পরিষ্কার করতে ও মৃত কোষ সরিয়ে ত্বক উজ্জ্বল করে তুলতে এর বিকল্পও নেই। মাঝেমধ্যে গাজরের রস মুখে মেখে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে ত্বক ঠিকমতো ধোয়াও হবে, কালো ছোপও কমবে।

৩। গোসলের সময় ও পরে

শীতকালে গোসলে সাবান কম ব্যবহার করুন। সাবান ব্যবহার করলেও আর্দ্রতাযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন। এতে ত্বকে খসখসে ভাব কমে আসবে। শীতে শরীরে তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের দেশে শর্ষের তেল শরীরে মাখার ঐতিহ্য বেশ প্রাচীন। এ ছাড়া অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা অন্য অনেক তেলও শরীরে ব্যবহার করা যায়। তবে তেল ব্যবহারের আগে দেখে নিতে হবে সেটি আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত কি না। উপযুক্ত হলে তেল হালকা গরম করে পুরো শরীরে ম্যাসাজ করতে পারেন। গোসলের পর এটি করলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।

৪।বাইরে যাওয়ার আগে ও পরে

শীতের রোদ গায়ে লাগে বেশ চিনচিন করেই। হিমহিম আবহাওয়ায় রোদ আরাম দিলেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না। বাইরে বের হওয়ার ৩০ মিনিট আগে এসপিএফ ১৫-৩০-সম্পন্ন সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন। বেশি ময়েশ্চারাইজারযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, প্রয়োজনে পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

বিকেলে সারা মুখে মধু লাগিয়ে পরে ধুয়ে ফেললে উপকার পাওয়া যায়।

৫) হ্যান্ড ক্রিমের ব্যবহার

মুখের ত্বকের যত্ন নিলেও অনেকে হাতের যত্নের কথা ভুলে যায়। কিন্তু শীতকালে মুখের পাশাপাশি হাতের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। তাই এসময় নিয়মিত হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করুন। বিশেষ করে কাপড় ধোয়ার পর, হ্যান্ড স্যানিটাইজ ব্যবহার করে অথবা থালা বাসন ধোয়ার পর অব্যশই হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করুন।

৬) স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট রেঞ্জে পরিবর্তন 

সারাবছর যে ধরনের ক্রিম অথবা স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা হয়, শীতকালে সেগুলো পরিবর্তন করতে হতে পারে। শীতের সময় স্কিন অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। শীতের সময় ত্বকের যত্ন নিতে নারিশিং এবং ময়েশ্চারাইজিং প্রোডাক্ট ইউজ করতে হবে, যাতে স্কিনের ড্রাইনেস বেড়ে না যায়। শীতকালে বডির স্কিনের জন্য ময়েশ্চারাইজিং শাওয়ার জেল, বডি বাটার এগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

৭) পায়ের জন্যও দরকার বাড়তি যত্ন

হাতের পাশাপাশি পায়েরও যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। শীতকালে পায়ে মোজা পরে থাকতে হয়। আগে পা ভালো করে পরিষ্কার করে পেট্রোলিয়াম জেলি কিংবা গ্লিসারিন দিয়ে পায়ের তালু ম্যাসাজ করুন। সপ্তাহে একবার এক্সফোলিয়েট করতে পারেন। পা ফাটা রোধে নিয়মিত পেট্রোলিয়াম জেলি কিংবা গ্লিসারিন ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে অলিভ অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। পা ফাটার সমস্যা থাকলে সেটা অনেকটাই কমে যাবে।

৮) শীতের সময় ত্বকের যত্ন নিতে ফেইস প্যাক

শীতের সময় ত্বক হারিয়ে ফেলে আর্দ্রতা। শীতের মধ্যে মুখে প্যাক লাগানো একটু ঝামেলা লাগতে পারে। কিন্তু সপ্তাহে ১/২ দিন গোসলের আগে একটু সময় তো দেওয়া যেতেই পারে। এসময়ের প্যাকগুলো হওয়া উচিত এমন ইনগ্রেডিয়েন্টযুক্ত যেগুলো স্কিনকে ময়েশ্চারাইজড রাখবে এবং আপনার স্কিনকে কোমল করে তুলবে। এমনই একটি প্যাক হলো মধু-গোলাপ জলের প্যাক। এক টেবিল চামচ মধু এবং এক টেবিল চামচ গোলাপ জল একসাথে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে ব্যবহার করুন। ১০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর করে।

ত্বকের যত্নের পাশাপাশি সুস্থ থাকার জন্য এসময় স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। শীতের মৌসুমে অনেকে গোসল এড়িয়ে যায়, এটি ভালো অভ্যাস নয়। আবার অনেকেই হট বাথ নিতে পছন্দ করেন। এ সময় অনেকেই অতিরিক্ত গরম পানি গায়ে ঢালেন। এতে ত্বক আরও শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। শীতের সময় ত্বকের যত্ন নিতে কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখবেন, সেটা জেনে নিলেন। শীতের সময়টাতে একটু যত্ন-ই পারে আপনার ত্বককে সফট ও হেলদি রাখতে।

অথেনটিক প্রোডাক্টস অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন। সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

কীভাবে বুঝবেন ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়েছে

মুখ ধোয়া বা স্নান করার পর ত্বকে অতিরিক্ত টানটান ভাব তৈরি হওয়া প্রধান লক্ষণ। অনকের আবার এই সময় ত্বকে অমসৃণতা ও চুলকানির ভাবও তৈরি হয় এই সময়। মনে রাখবেন, শুষ্ক ত্বকে বলিরেখার সমস্যা দেখা যায় জলদি। তাই বিশেষ যত্ন নেওয়া একান্ত দরকার। 

কী করবেন

  • ১।দিনে দু’বার ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং করুন। যাদের ত্বক বেশি শুকনো তাঁরা অয়েলবেস ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। 
  • ২।শুষ্ক ত্বকে স্ক্রাবিং বেশি না করাই ভালো। দরকার হলে মুসুর ডাল বেটে ঘরেই ক্লিনজার তৈরি করে নিতে পারেন। এটি মুখের সাথে সাথে সারা গায়ে লাগান। ত্বকের মরা কোষ দূর করতে এটি খুব কার্যকরী। মুসুর ডাল বাটার সাথে কাচা দুধ মিশিয়ে নিন দরকার পড়লে। 
  • ৩।পাকা কলা চটকে ফেসপ্যাক বানাতে পারেন। এটি শুষ্ক ত্বককে আদ্রতা জোগায়। .
  • ৪।মধু দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়েও ব্যবহার করতে পারেন শীতের সময়। 
  • ৫। বেশি করে জল খান। শীতে শুধু ত্বক নয়, শুষ্ক পরিবেশের কারণে গোটা শরীরে আদ্রতার অভাব দেখা যায়। তাই শীতে জল তেষ্টা না পেলেও জল খান সময় মেনে। ৩-৪ লিটার জল পান করুন রোজ। 
শীতকালে কিভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন ।
শীতকালে কিভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন । 3

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button