Ways to reduce stomach pain। পেট ব্যথা কমানোর উপায়!পেট ব্যথা একটি সাধারণ কিন্তু বিবিধ কারণ দ্বারা প্রভাবিত একটি উপসর্গ। এটি হালকা থেকে তীব্র হতে পারে এবং সাধারণত অস্থায়ী হলেও কখনও কখনও গুরুতর রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। পেট ব্যথার কারণ হতে পারে হজমের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক, অন্ত্রের প্রদাহ, সংক্রমণ বা প্রজননতন্ত্রের সমস্যা।
এটি প্রতিদিনের কার্যকলাপ ব্যাহত করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরামর্শ প্রয়োজন হতে পারে। পেট ব্যথা সম্পর্কে সচেতনতা ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আলোচনার বিষয় হলো পেট ব্যথা কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করা।
পেট ব্যথার প্রধান কারণ
পেট ব্যথা কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করার আগে জানতে হবে পেট ব্যথার প্রধান কারণ কি! পেট ব্যথার প্রধান কারণগুলো জানলে এর প্রতিকার করা সহজ হয়। নিচে কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো:
- বদহজম: এটি খাদ্য সঠিকভাবে হজম না হলে ঘটে। প্রায়ই ফাস্ট ফুড এবং অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে বদহজম হয়।
- গ্যাস: পেটে অতিরিক্ত গ্যাস জমলে এটি ব্যথার কারণ হতে পারে। গ্যাস সাধারণত অতিরিক্ত বাতাস গ্রহনের ফলে হয়, যা দ্রুত খাবার খাওয়া বা চুইংগাম চিবানোর কারণে হতে পারে।
- অ্যাসিডিটি: পেটে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হলে এটি ব্যথার কারণ হতে পারে। অ্যাসিডিটি সাধারণত তেল-মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে হয়।
- ইনফেকশন: পেটের কোনো ধরনের ইনফেকশন যেমন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা প্যারাসাইটের কারণে পেট ব্যথা হতে পারে।
- অন্য সমস্যা: কোন ধরনের গ্যাস্ট্রিক আলসার, ফুড পয়জনিং, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS), অথবা কিডনি স্টোন ইত্যাদি সমস্যাও পেট ব্যথার কারণ হতে পারে।
পেট ব্যথা কিসের লক্ষণ
পেট ব্যথা বিভিন্ন রোগ ও অবস্থার লক্ষণ হতে পারে। পেট ব্যথার সম্ভাব্য কারণগুলো নিম্নে পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা হলো:
- হজমের সমস্যা: বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, এবং অ্যাসিডিটি।
- অন্ত্রের সংক্রমণ: গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS)।
- প্রজননতন্ত্রের সমস্যা: এন্ডোমেট্রিওসিস, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS)।
- ইনফ্লেমেটরি অবস্থার: অ্যাপেন্ডিসাইটিস, প্যানক্রিয়াটাইটিস।
- ইনফেকশন: ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI), পেটের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।
- অন্ত্রের বাধা: ইলিয়াস, অন্ত্রের আবদ্ধতা।
- অঙ্গের প্রদাহ: লিভার, কিডনি, অথবা পিত্তথলির প্রদাহ।
- আঘাত বা আঘাতজনিত সমস্যা: পেটের আঘাত, মাংসপেশীর টান।
পেট ব্যথা কমানোর উপায় এবং পেট ব্যথা হলে করণীয়
হঠাৎ পেট ব্যথা হলে কিছু সাধারণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাৎক্ষণিকভাবে স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে। নিচে করণীয় পদক্ষেপগুলো পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা হলো: ফলে পেট ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে ধারণা নিম্নের আলোচনা থেকে বোঝা যাবে।
- বিশ্রাম নিন: পেটের ব্যথা হলে শুয়ে বিশ্রাম নিন এবং নিজেকে আরামদায়ক অবস্থানে রাখুন।
- হালকা খাবার খান: সহজপাচ্য এবং হালকা খাবার, যেমন খিচুড়ি বা টোস্ট, খান। মশলাযুক্ত বা ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন।
- পানি পান করুন: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পানির অভাবে অনেক সময় পেট ব্যথা হতে পারে।
- গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করুন: পেটের উপর গরম পানির ব্যাগ বা তাপ প্রয়োগ করুন। এটি পেশী শিথিল করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ নিন: প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শমতো পেইন রিলিভার বা অ্যান্টাসিড ওষুধ গ্রহণ করুন।
- মাসাজ করুন: পেটের হালকা মাসাজ করতে পারেন, যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- যোগব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন: কিছু হালকা যোগব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন যা পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- ডাক্তারের পরামর্শ নিন: যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা তীব্র হয়, তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এই পদক্ষেপগুলি সাধারণত হঠাৎ পেট ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে, তবে কোনও গুরুতর সমস্যা বা দীর্ঘমেয়াদী ব্যথার ক্ষেত্রে চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Ways to get rid of neck pain I ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়
পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানার ঔষধ
পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানা (ডায়রিয়া) সাধারণ সমস্যা হলেও, এর জন্য সঠিক ওষুধ ও চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীচে কিছু সাধারণ ওষুধের নাম উল্লেখ করা হলো, তবে যেকোনো ওষুধ গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পেট ব্যথা কমানোর উপায় এর মধ্যে অন্যতম হলো ঔষধ সেবন।
পেট ব্যথার জন্য ওষুধ:
- মেফেনামিক অ্যাসিড (Mefenamic Acid): পেটের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
- ইবুপ্রোফেন (Ibuprofen): সাধারণত প্রদাহ ও ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
- ডাইসাইক্লোমিন (Dicyclomine): পেটের মাংসপেশীর সংকোচন কমাতে সাহায্য করে।
- বুটাইলস্কোপোলামিন (Butylscopolamine): পেটের মাংসপেশী শিথিল করতে ব্যবহৃত হয়।
পাতলা পায়খানার জন্য ওষুধ:
- ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট (ORS): শরীরের পানি ও লবণের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে।
- লোপেরামাইড (Loperamide): পাতলা পায়খানা কমাতে সাহায্য করে।
- বিসমাথ সাবসালিসিলেট (Bismuth Subsalicylate): পেটের অস্বস্তি ও ডায়রিয়া কমাতে ব্যবহৃত হয়।
- প্রোবায়োটিকস (Probiotics): অন্ত্রের সুস্থ ব্যাকটেরিয়া পুনঃস্থাপনে সাহায্য করে।
যেকোনো ওষুধ গ্রহণের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ বিভিন্ন ব্যক্তির জন্য ওষুধের কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভিন্ন হতে পারে। ডায়রিয়া এবং পেট ব্যথার মূল কারণ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পেট ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
পেট ব্যথা কমানোর উপায় জন্য কিছু সাধারণ ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা প্রাকৃতিক ও সহজলভ্য উপাদান ব্যবহার করে ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে। নিচে ১০টি ঘরোয়া উপায় উল্লেখ করা হলো:
- আদা চা: আদা চা হজমে সাহায্য করে এবং পেটের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
- পুদিনা পাতার রস: পুদিনা পাতা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং পেটের ব্যথা কমাতে কার্যকর।
- হলুদ দুধ: গরম দুধের সাথে একটু হলুদ মিশিয়ে খেলে প্রদাহ কমতে পারে। এটি পেট ব্যথা কমানোর উপায় এর মধ্যে অন্যতম।
- গরম পানির ব্যাগ: পেটের উপর গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করলে পেশী শিথিল হয় এবং ব্যথা কমে।
- মেথি বীজ: এক গ্লাস পানিতে কিছু মেথি বীজ ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে পেটের ব্যথা কমতে পারে।
- লেবু পানি: লেবুর রস মিশ্রিত গরম পানি হজমে সাহায্য করে এবং পেট ব্যথা কমায়।
- আপেল সিডার ভিনেগার: এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খেলে পেটের ব্যথা কমতে পারে।
- তুলসী পাতা: তুলসী পাতার রস হজমে সহায়ক এবং পেটের ব্যথা কমাতে সহায়ক। পেট ব্যথা কমানোর উপায় এর মধ্যে অন্যতম হলো তুলসী পাতা।
- দারুচিনি চা: দারুচিনি চা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং পেট ব্যথা কমাতে সহায়ক।
- পানি পান: পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং পেটের ব্যথা কমতে সাহায্য করে।
এই ঘরোয়া উপায়গুলো সাধারণত হালকা পেট ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে, যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র হয়, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পেট ব্যথা কেন হয়
পেট ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে। এটি হালকা থেকে তীব্র হতে পারে এবং বিভিন্ন রোগ বা অবস্থার লক্ষণ হতে পারে। পেট ব্যথার কয়েকটি সাধারণ কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
- হজমের সমস্যা: বদহজম, গ্যাস্ট্রিক, এবং অ্যাসিডিটি পেট ব্যথার সাধারণ কারণ।
- অন্ত্রের সংক্রমণ: গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS) অন্ত্রের সংক্রমণের কারণে হতে পারে।
- প্রজননতন্ত্রের সমস্যা: মেয়েদের মধ্যে এন্ডোমেট্রিওসিস, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) এবং পিরিয়ডের সময়ের ব্যথা পেটের ব্যথার কারণ হতে পারে।
- ইনফ্লেমেটরি অবস্থার: অ্যাপেন্ডিসাইটিস, প্যানক্রিয়াটাইটিস বা গলব্লাডারের প্রদাহ পেটের ব্যথার কারণ হতে পারে।
- ইনফেকশন: ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI), পেটের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।
- অন্ত্রের বাধা: ইলিয়াস বা অন্ত্রের আবদ্ধতা পেট ব্যথার কারণ হতে পারে।
- আলসার: পেপটিক আলসার বা অন্ত্রের আলসার পেটের ব্যথার কারণ হতে পারে।
- গ্যাস্ট্রিক: খাদ্যে গ্যাস সৃষ্টি হলে পেটের ব্যথা হতে পারে।
- খাদ্য বিষক্রিয়া: খাদ্যে বিষক্রিয়া বা খাবারে অ্যালার্জি থেকেও পেটের ব্যথা হতে পারে।
- স্ট্রেস ও মানসিক চাপ: অতিরিক্ত স্ট্রেস ও মানসিক চাপ হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে পেট ব্যথার কারণ হতে পারে।
পেট ব্যথার প্রকৃতি ও তীব্রতার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী বা অতিরিক্ত তীব্র হয়, তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বাচ্চার পেট ব্যথা
বাচ্চাদের পেট ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি হালকা থেকে তীব্র হতে পারে এবং কখনও কখনও গুরুতর সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। নিচে বাচ্চাদের পেট ব্যথার কয়েকটি সাধারণ কারণ এবং তাদের জন্য করণীয় পদক্ষেপগুলি উল্লেখ করা হলো:
কারণসমূহ:
- বদহজম: নতুন বা ভারী খাবার খাওয়ার ফলে বদহজম হতে পারে।
- গ্যাস্ট্রিক: গ্যাসের কারণে পেটের ব্যথা হতে পারে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য: পায়খানা শক্ত বা অনিয়মিত হলে পেট ব্যথা হতে পারে।
- ইনফেকশন: ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, যেমন গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস।
- খাদ্য বিষক্রিয়া: খাদ্যে বিষক্রিয়া বা খাবারে অ্যালার্জি।
- স্ট্রেস ও উদ্বেগ: মানসিক চাপ বা উদ্বেগের কারণে পেট ব্যথা হতে পারে।
- অন্ত্রের সমস্যা: ইন্টুসাসসেপশন বা অন্ত্রের বাধা।
- অ্যাপেন্ডিসাইটিস: পেটের ডানদিকের নিচে তীব্র ব্যথা।
করণীয় পদক্ষেপ:
- বিশ্রাম দিন: বাচ্চাকে শুয়ে বিশ্রাম নিতে দিন।
- হালকা খাবার দিন: সহজপাচ্য খাবার, যেমন খিচুড়ি বা স্যুপ খেতে দিন।
- পানি পান করান: পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার খেতে উৎসাহিত করুন।
- পেট মালিশ করুন: হালকা হাতে পেটের উপর ঘড়ির কাঁটার দিকে মালিশ করতে পারেন।
- গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করুন: পেটের উপর গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে।
- ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ: প্রয়োজনে শিশুদের জন্য উপযুক্ত পেইন রিলিফ বা অ্যান্টাসিড ওষুধ দিতে পারেন, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- পায়খানা নিয়মিত করানোর চেষ্টা করুন: কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ও পর্যাপ্ত পানি দিতে পারেন।
- চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা তীব্র হয়, অথবা অন্যান্য গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়, যেমন জ্বর, বমি, রক্ত মিশ্রিত পায়খানা, তাহলে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বাচ্চাদের পেট ব্যথা কখনও কখনও গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, তাই যদি ব্যথা অব্যাহত থাকে বা বৃদ্ধি পায়, তবে অবশ্যই চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়া পেট ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে ও বিস্তারিত জানতে হবে।
উপসংহার
পেট ব্যথা একটি অস্বস্তিকর এবং যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা, কিন্তু সঠিক যত্ন এবং সহজ কিছু প্রতিকার মেনে চললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আদা চা, পুদিনা পাতা, লেবুর পানি, ক্যামোমাইল চা, হালকা খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি পান, পেট ম্যাসাজ এবং গরম পানির থলে প্রয়োগের মাধ্যমে আপনি সহজেই পেট ব্যথা কমাতে পারেন।
তবে যদি আপনার ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়, তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ভালো স্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল পেট ব্যথা কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করা। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আশাকরি আপনি উপকৃত হবেন।
পেট ব্যথা কমানোর উপায় নিয়ে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং উত্তর/FAQ
প্রশ্ন: পেট ব্যাথার ট্যাবলেট এর নাম কি?
উত্তর: পেট ব্যাথার জন্য সাধারণত ব্যবহৃত ট্যাবলেটগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় নাম রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই ব্যাথা নিরাময়ে কার্যকরী। সাধারণত “মেফেনামিক অ্যাসিড” (Mefenamic Acid) এবং “ইবুপ্রোফেন” (Ibuprofen) পেট ব্যাথা কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও “ডাইসাইক্লোমিন” (Dicyclomine) এবং “বুটাইলস্কোপোলামিন” (Butylscopolamine) পেটের ব্যাথা এবং অস্বস্তি কমাতে ব্যবহৃত হয়। এসব ট্যাবলেট গ্রহণের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ বিভিন্ন ব্যক্তির জন্য এই ওষুধগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভিন্ন হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শমতো চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিত ট্যাবলেট সেবন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
প্রশ্ন: গ্যাসের ব্যথা হলে কি করা উচিত?
উত্তর: গ্যাসের ব্যথা হলে প্রথমেই উচিত সহজপাচ্য খাবার খাওয়া এবং ভারী, তেল-মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করা। প্রচুর পানি পান করা উচিত, কারণ এটি হজমে সহায়তা করে এবং গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। হালকা হাঁটাচলা করা বা কিছুটা শারীরিক ব্যায়াম করা গ্যাস নির্গমনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। আদা চা বা পুদিনা পাতার রসও প্রাকৃতিকভাবে গ্যাসের ব্যথা কমাতে কার্যকরী। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ, যেমন সিমেথিকোন ট্যাবলেট, ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে যেকোনো ওষুধ গ্রহণের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি গ্যাসের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
প্রশ্ন: মেয়েদের নাভির নিচে ব্যথা হয় কেন?
উত্তর: মেয়েদের নাভির নিচে ব্যথা হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। এই ধরনের ব্যথা প্রায়শই প্রজননতন্ত্র, মূত্রনালী, অন্ত্র বা পেটের অন্যান্য অংশের সমস্যার কারণে হতে পারে। মাসিকের সময় হরমোনজনিত পরিবর্তন, ওভুলেশন বা পিরিয়ডের সময় গর্ভাশয়ের সংকোচন থেকে এ ধরনের ব্যথা হতে পারে। এছাড়া, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই), পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস), এন্ডোমেট্রিওসিস, অথবা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যাও নাভির নিচে ব্যথার কারণ হতে পারে। গ্যাস্ট্রিক বা হজমের সমস্যা থেকেও এই ধরনের ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই ব্যথা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অতিরিক্ত তীব্র হয়, তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ এটি কোন গুরুতর সমস্যার সংকেত হতে পারে। ব্যথার প্রকৃতি এবং উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: মিলনের সময় তলপেটে ব্যথা হয় কেন?
উত্তর: মিলনের সময় তলপেটে ব্যথা হওয়ার কারণ বিভিন্ন হতে পারে। এটি সাধারণত শারীরিক, মানসিক বা স্বাস্থ্যগত সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। যৌন মিলনের সময় তলপেটে ব্যথা বা অস্বস্তি অনেক সময় প্রজননতন্ত্রের সমস্যা, যেমন এন্ডোমেট্রিওসিস, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস), অথবা পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ (পিআইডি) থেকে হতে পারে। এছাড়া, যৌনমিলনের সময় যোনির শুষ্কতা, যৌনমিলনের ভুল পজিশন বা অতিরিক্ত চাপ থেকেও তলপেটে ব্যথা হতে পারে। মানসিক চাপ বা উদ্বেগও যৌনমিলনের সময় শারীরিক অস্বস্তির কারণ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী বা তীব্র ব্যথার ক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ এটি গুরুতর স্বাস্থ্যের সমস্যার সংকেত হতে পারে এবং সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।